শেয়ার বিজ ডেস্ক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের রাজনীতি হোক প্রতিযোগিতামূলক কিন্তু তা যেন হয় নীতিনিষ্ঠ ও ভদ্রতার সীমার মধ্যে। জনগণের আস্থা ফিরে পেতে হলে রাজনীতিতে ঘৃণা নয়, সহযোগিতা ও দেশপ্রেমকে প্রাধান্য দিতে হবে।
বিবিসি বাংলাকে গতকাল সোমবার দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমটির বাংলা বিভাগের সম্পাদক মীর সাব্বির ও সিনিয়র সাংবাদিক কাদির কল্লোলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান দ্রুতই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি নাÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এটি নির্ভর করবে দল ও দেশের জনগণের ওপর। দেশে ফেরার বিষয়ে তিনি জানান, যদিও বর্তমানে শারীরিকভাবে যুক্তরাজ্যে আছেন, মন-মানসিকতায় তিনি দীর্ঘ ১৭ বছর ধরেই বাংলাদেশে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দ্রুতই দেশে ফিরব, ইনশাআল্লাহ।
নির্বাচনে সক্রিয় অংশগ্রহণ সম্পর্কে কথা বলার সময় তারেক রহমান উল্লেখ করেন, নির্বাচনের সঙ্গে আমার ওতপ্রোত সম্পর্ক; জনগণের প্রত্যাশিত অংশগ্রহণ থাকলে আমাকে সেখানে থাকতে হবে।’
জুলাই আন্দোলনে ‘মাস্টারমাইন্ড’ তকমা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি নিজেকে এই আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে দেখি না। জুলাই-আগস্টের সফল আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে বহু বছর আগে থেকে। এই আন্দোলনে শুধু বিএনপি নয়, সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সাধারণ মানুষ, ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, গৃহিণী, এমনকি অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরাও অংশ নিয়েছেন। দল-মত নির্বিশেষে সবার অবদানেই এই আন্দোলন সফল হয়েছে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘শারীরিকভাবে হয়তো ব্রিটেনে আছি, কিন্তু মন-মানসিকতা সবকিছু মিলিয়ে আমি ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশেই রয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘দেশে জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের সময় কেমন করে দূরে থাকব? নির্বাচনের সময় জনগণের সঙ্গে জনগণের মাঝেই থাকব।’
তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি প্রথম থেকেই বলে আসছিল, যত দ্রুত নির্বাচন হবে তত দ্রুত দেশে স্থিতিশীলতা আসবে। জাতীয় নির্বাচন যদি আরও ছয় মাস আগে অনুষ্ঠিত হতো তাহলে দেশের অনেকগুলো ক্রাইসিস তৈরি হতো না। দেরিতে হলেও সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ডিসেম্বরের ভেতরে চেয়েছিলাম তবে অন্তর্বর্তী সরকার ফেব্রুয়ারির ভেতরে নির্বাচন করতে চাইছে। আমরা আস্থা রাখতে চাই, নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকার সব রকম উদ্যোগ পর্যায়ক্রমিকভাবে নেবে।’
নির্বাচনে খালেদা জিয়ার ভূমিকা কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শারীরিক সক্ষমতা যদি এলাও করে নিশ্চয়ই উনি কিছু না কিছু ভূমিকা রাখবেন।
জাতীয় রাজনীতিতে ডাকসুর প্রভাব পড়বে কি না প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, যেটা দেখলাম, বিভিন্ন মিডিয়াতে কিছু ব্যক্তি, যেমন-মান্না ভাই, উনি তো বোধহয় দুবার ভিপি ছিলেন। আমার থেকে অনেক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন রাজনীতিবিদ। আমরা যদি উনার বক্তব্য শুনে থাকি বা ধরে থাকি তাহলে তো আমি মনে করি না কোনো কারণ আছে। ছাত্র রাজনীতি ছাত্র রাজনীতির জায়গায়, জাতীয় রাজনীতি জাতীয় রাজনীতির জায়গায় থাকুক।
জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বীকৃত যে নিয়ম, আইন-কানুন আছে, এগুলোর ভেতরে থেকে যদি কেউ রাজনীতি করে অবশ্যই করতে পারে। বিএনপি সবসময় বহুদলীয় রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। কাজেই বিষয়টি আমরা এভাবেই দেখতে চাই।
আওয়ামী লীগ প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, দল হিসেবে তারা যদি অন্যায় করে থাকে তাহলে দেশের আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে। দেশের আইন সিদ্ধান্ত নেবে।

Discussion about this post